জাতীয় রাজনীতিতে নক্ষত্রপতন।২৫ দিনের লড়াই শেষ, শেষরক্ষা আর হল না । হাসপাতালেই প্রয়াত হলেন সিপিআইএম-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি(Sitaram Yechury)। বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। গত ১৯ অগস্ট ফুসফুসে গুরুতর সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল দিল্লির এইমস হাসপাতালে। প্রথম থেকেই আইসিইউ-তে রাখা হয়েছিল তাঁকে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে অবস্থার আরও অবনতি হয়। রেসপিরেটরি সাপোর্টে রাখা হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জীবনাবসান হয় প্রবীণ এই নেতার। সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য নীলোৎপল বসু জানিয়েছেন, সীতারাম ইয়েচুরি প্রয়াত হয়েছেন।
গত ৮ অগাস্ট প্রয়াত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিআইএম-এর প্রবীণ নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।তাঁর মৃত্যুতে অসুস্থতার কারণে কলকাতায় আসতে পারেননি ইয়েচুরি। একমাস যেতে না যেতেই আরও এক দুঃসংবাদ। দল হারাল আরও এক নেতাকে।
১৯৫২ সালের ১২ অগস্ট সীতারাম ইয়েচুরির জন্ম মাদ্রাজে (অধুনা চেন্নাই)। পৈতৃক বাড়ি অন্ধ্রপ্রদেশের হায়দরাবাদে। স্কুলশিক্ষা প্রথমে সেখানেই। ১৯৬৯ সালে দিল্লির প্রেসিডেন্ট এস্টেট স্কুলে ভর্তি হন। সেখান থেকেই সিবিএসই দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন তিনি। অর্থনীতিতে স্নাতক হন দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে। তার পর স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি হন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এ।
জেএনইউয়েই ইয়েচুরির বামপন্থী ছাত্র রাজনীতিতে যোগদান করেন।রাজনীতির ময়দানে নেমেছিলেন ছাত্র বয়স থেকেই। সেখানে পড়াকালীনই সিপিএমের সদস্যপদ গ্রহণ করেন এবং পুরো সময়ের রাজনীতি করার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৭৮ সালে ভারতের ছাত্র ফেডারেশন (এসএফআই)-এর সর্বভারতীয় যুগ্ম সম্পাদক হন। ১৯৮৪ সালে এসএফআই-এর সর্বভারতীয় সভাপতি। সিপিএমের অন্ধ্রপ্রদেশ (তখন অবিভক্ত) রাজ্য কমিটিতে ছিলেন। ১৯৮৫ সালে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সাল থেকে পলিটব্যুরোর সদস্য। ২০১৫ সালে কোঝিকোড় পার্টি কংগ্রেসে তিনি সিপিএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। ২০০৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বাংলা থেকে নির্বাচিত হয়ে রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন ইয়েচুরি।
সিপিএম সাধারণ সম্পাদকের প্রয়াণে শোকের ছায়া বাম শিবিরে। শোকবার্তা জানিয়েছে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী থেকে বহু রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব।শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সীতারামের মতো রাজনীতিকের মৃত্যু জাতীয় রাজনীতিতে বড় ক্ষতি বলে উল্লেখ করেছেন মমতা।
(বিস্তারিত খবর, সঠিক খবর, গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে ফলো করুন আমাদের X Twitter, Facebook, YouTube, এবং Instagram পেজ)