তন্দ্রা মুখার্জী: আজকের ভারতের ভোট-বাজারে ধর্ম নিয়ে যেন ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে চলেছে। সারা দেশজুড়ে ‘গেল গেল’ রব উঠে গেছে একেবারে। হোতা কে বা কারা এর পেছনে! উদ্দেশ্যই বা কি! এগুলোই এখন স্বাভাবিক মনের মানুষদের প্রশ্ন। শিক্ষিত মানুষের কাছে আবহমানকালের ধর্ম সম্বন্ধে ধারণা, যা মানুষকে সৎপথে চলতে শেখায়, কারো অপকার করতে নিজের বিবেক-কে বাধা দেয়। এই প্রেক্ষিতের মাঝে, সম্প্রদায় ভিত্তিক বিভেদ, আচরণগত জীবনযাপন ও আমিষ-নিরামিষ ভোজনের প্রসঙ্গ একেবারেই সম্পর্কহীন। ধর্মীয় আচরণ দুনিয়ার সব সমাজে পৃথক হলেও মূল সুরটি কিন্তু সর্বত্রই অভিন্ন। সেটি হলো ঈশ্বরের উপাসনা; নিজের অন্তরের সবটুকু আকুতি উজাড় করে দিয়ে তাঁকে আবাহন জানানো। সেপথে কোথাও কোনদিন নিয়ম ছিলনা, আজও নেই কোনও মানুষের অধিকার– তাকে অমান্য করবার, তাচ্ছিল্য করবার আবার একইসঙ্গে জোর করে কারো কে দিয়ে—অন্য ধর্মের প্রথা পালন করাবার। তাহলে, ভোট প্রচারের ময়দানে কেন আসছে এই অনৈতিক ইঙ্গিত, আলোচনা এবং অন্য ধর্মকে অবমাননা করানোর ষড়যন্ত্র বারবার? মঙ্গলসূত্র, আমিষ-নিরামিষ ভোজনে কোনও বিশেষ ধর্মকে অমান্য করার বিধান দেবার অধিকার কোথা থেকে; অর্জন করেছে কোনো গণতান্ত্রিক দেশের রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিরা? এই নির্লজ্জ আচরণ কী পুনরায় এক সার্বভৌম, ধর্মনিরপেক্ষ দেশে… ধর্মীয় কারণে দাঙ্গা-হানাহানি অযুত প্রাণের হত্যা ও বহু নারীর সম্ভ্রম নষ্টের পথে: দেশবাসীকে প্ররোচনা দেবার জন্যই? দেশের শান্তি ধ্বংস করার অধিকার কী কোনও “গাঁয়ে না মানা আপনি মোড়ল”-দের প্রজাতান্ত্রিক দেশের সঙবিধান কখনও দিতে পারে?!