তন্দ্রা মুখার্জী: রাজনীতিতে কী যাদু কী মায়া! যোগদানের দিন থেকে শুরু হয়ে যায় – মতলবের অনুসন্ধান। যে যোগ দেয় তার ব্যাপারে সম্যক ওয়াকিবহাল হতে হবেনা? যোগদানকারী নামিদামি হলে তার বিষয়ে খোঁজখবরের কাটাছেঁড়া চলে একটু বেশি। আর প্রাতস্মরণীয় ব্যক্তি হলে তো কথাই নেই। তার সাতগুষ্টির খবর না পাওয়া অবধি, আমজনতার রক্তচাপ বাড়তেই থাকে। যদিও জানার কোনও শেষ আছে বলে, মন মানেনা। তারপরেই ভীষণ দরকারী এবং মহত্তম কাজটি শুরু হয়ে যায় – সেই বিশেষ মানুষটির Moral Dessection অর্থাৎ কিনা চরিত্রের খোঁজখবর নেওয়া। আরে বাবা, ‘ভাবিতে উচিত কাজ করিতে যখন’ মনে রাখতে হবেনা! যদি কালেদিনে সেই লোক ভোটে দাঁড়িয়ে যায় কোনও দলের হয়ে? আর ভদ্র বাড়ির মেয়ে-বউরা তাকে ভোট দিয়ে ফেলে যদি, সেই চিরকালের ‘মেয়েবুদ্ধি’ প্রয়োগ করে! ছ্যা ছ্যা ছ্যা। নিজেদের পরিবারের মান-ইজ্জত আর অবশিষ্ট থাকবে কিছু? অতএব তার গুণাবলীর সন্ধানে তার শত্রুপক্ষের ঘাঁটিতে কালেভদ্রে যাতায়াত রাখা ভালো। তাতে, শ্যামও থাকবে কুলও যাবেনা! বিরোধী দল তাদের মিত্র ভেবে নিলে ভবিষ্যতে তাদের হাতে মারা পড়তেও হবেনা; দরকারের সময় কাজেকম্মেও পাশে পাওয়ার একটা রাস্তা খোলা থাকবে। অন্যদিকে, নতুন যোগ দেওয়া লোকটারও হাঁড়ির খবর এক্কেবারে হাতের মুঠোয় এসে যাবে। তখন নিজেকেও বেশ ভারিক্কি চালের মাননীয় বলে: পরিবারে, চেনাজানা মহলে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলা যাবে টুক করে! ওই যাকে বলে আরকি, জাতে ওঠা অথবা উঁচুডালে বাসা বাঁধা। হেঁ হেঁ বাবা, সেটি আর যে সে লোকের কম্ম নয়! বলে, নিজের পিঠ নিজে চাপড়ানোর মোক্ষম এক সুযোগ একেবারে যেন, স্বর্গ হইতে লুফিয়া লইবার সুখ অনুভব করা যাবে – নিজের মরবার দিন ইস্তক।