মে মাস মানেই যেন ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়(Cyclone), এমনটাই আশঙ্কা হয়ে যাচ্ছে বঙ্গবাসীর। সেই ২০০৯ সালে ‘আয়লা’ দিয়ে শুরু হয়েছে, তারপর ২০১৯ সালে ‘ফণী’, তারপর ‘আমফান’, ‘যশ’ প্রতিবছর এই মে মাসেই এক একটা ঘূর্ণিঝড়ের দাপট সামলেছে বাংলা। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। তার ক্ষতিপূরণ হয়তো এখনও সাগরের দিকের বসতিদের দিতে হয়। তাই আশঙ্কায় বঙ্গবাসী, এবছরও কী তার অন্যথা হবে না? ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’(Remal) কি তছনছ করবে বাংলাকে?
কেন মে মাসেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রবণতা?
বিশেষজ্ঞদের মতে, সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধি এর অন্যতম বড় কারণ। মার্চের শেষ থেকে এপ্রিল-মে মাসের তীব্র গরম জলের উষ্ণতা বৃদ্ধি করছে। আর এই গরমজলই ঘূর্ণিঝড়ের ‘চালিকাশক্তি’ বলা যায়।
উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় তৈরির জন্য যে অনুকূল পরিস্থিতির দরকার সেই পরিস্থিতি রয়েছে এই মুহুর্তে বঙ্গোপসাগরে। অর্থাৎ সাগরের জলের তলার তাপমাত্রা ২৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে হয় এবং ৫০ মিটার পর্যন্ত গভীরতায় এই তাপমাত্রা থাকতে হয়। ৩০-৩২ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা রয়েছে বর্তমানে বঙ্গোপসাগরের জলে। তাই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অনেকটা সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে আবহাওয়া দফতর।
কী বলছে মৌসম ভবন?
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ২২মে আরব সাগরে একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে চলেছে। আবার ২৩ মে, দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ বলয় তৈরির ইঙ্গিত মিলেছে উপগ্রহ চিত্রে। যেহেতু আন্দামান সাগরে ১৯ মে মৌসুমী বায়ু প্রচুর জলীয় বাষ্প নিয়ে প্রবেশ করবে, অতএব সেখান থেকে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পর্যাপ্ত জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে এই নিম্নচাপ বলয় আরও শক্তি সঞ্চয় করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।উত্তর আন্দামান সাগরে ২৫ মে নাগাদ এটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এরপর আরও শক্তি বৃদ্ধি করে তা ক্রমশ উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে এগোতে পারে। জলভাগের উপর দিয়ে যাওয়ায় আরও শক্তিশালী হয়ে ২৮ মে এটি অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। ২৯ মে অথবা ৩০ মে এটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে ভূভাগে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার নাম ‘রেমাল'(Remal) দেওয়া হয়েছে।
তবে পুরোটাই এখন সম্ভাবনা কারণ এখনও নিম্নচাপ তৈরি হয়নি। নিশ্চিতভাবে ‘রেমালের’ অভিঘাত নিয়ে এখনও কিছু বলেনি দিল্লির মৌসম ভবন। তবে উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে এগোলে মায়ানমার, বাংলাদেশে তাণ্ডব চালাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কিন্তু দিক বদলালে বাংলাকেও তছনছ করে দিতে পারে ‘রেমাল’।
(বিস্তারিত খবর, সঠিক খবর, গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে ফলো করুন আমাদের X (Twitter), Facebook, YouTube, এবং Instagram পেজ)